বাংলাদেশে যে
আন্দোলন চলছে তা শুধু একটি ক্ষমতা পিপাশু অশুর শক্তিকে হটিয়ে আর একটি অশুর শক্তির অবস্থান নেয়ার চেষ্টা মাত্র। অশুর শক্তি বললাম কারন ১৯৯১ এর স্বৈরাচার পতনের পর থেকে আমরা অনেকবার এই শক্তিগুলোর ক্ষমতার পালাবদল দেখেছি। এই পরিবর্তনের ভিতর দিয়ে এদের দ্বারা দেশে কিছু ইমারত নির্মান
হয়েছে ,ব্রিজ কালবার্ট হয়েছে ,মানুষকে ডিজিটাল করার নামে হাতে হাতে মোবাইল ,প্রত্যন্ত
অঞ্চলে ডিস চ্যানেলের ব্যবহার ইত্যাদি পরিবর্তন দেখেছি, যা উন্নয়নের চলমান ধারা।যার ধারাবাহিকতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমল থেকে
আজকের একরোখা শেখ হাসিনা আমল পর্যন্ত চলমান।কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে রাজনৈতিক
ও ব্যক্তি নৈতিক চরিত্রের যে উন্নয়ন ঘটার কথাছিলো তা ক্রমান্বয়ে উন্নতি না ঘটে অবনতি
হয়েছে। কমেনি রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, লুটপাট । সৃষ্টি হয়নি সহনশীল চিন্তাধারা
ও একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের রাজনীতি।এই দুই উভয় শক্তির কাজ হলো ক্ষমতায় গিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার
অপব্যবহার ও লুটপাট, আর বিরোধী দলে গিয়ে আন্দোলনের নামে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস ও জানমালের ক্ষতি সাধন করা।এই গুনের দিক থেকে আওয়ামেলীগ ও বিএনপি যেন একই মায়ের গর্ভে জন্মানো আপন
জমজ সহদর ভাই।যদিও আজ আমরা বাংলাদেশের সিংহভাগ মানুষ এদের অশুভ যাদু মন্ত্রের মায়ায় আছন্ন
হয়ে বুঝে না বুঝে দুই ভাগে ভাগে ভাগ হয়েগেছি।তাই যতই ভালো কথা, পরিবর্তনের কথা বলিনা
কেন আমার আপনার কথায় যাদুর মায়ায় আছন্ন সিংহভাগ মানুষের এত সহজে নিরপেক্ষ ও শুভচিন্তার
উদয় হবেনা।কিন্তু আওয়ামী বিএনপি এই দুই ভাইয়ের অন্তরের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা যদি একটু
ভাগবাটোয়ারা করে খাওয়ার মানুসিকতা উদয় করে দিতো তাহলে এদের আজীবন ক্ষমতা ধরে রাখার যুদ্ধে
এতো নিরীহ মানুষের প্রাণহানি হতো না।
আজ গণতন্ত্রের
দোহাই দিয়ে একে অপরের মধ্যে যে ছুরি চাকুর ধার দেওয়ার প্রতিযোগিতা চলছে এর মধ্যে কি গণতন্ত্রের কোন রঙ রস রুপ গন্ধ আছে।গণতন্ত্রের
মূলমন্ত্র হচ্ছে মত প্রকাশের অধিকার ও অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন। বর্তমান
শক্তি প্রয়োগ করে যারা ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন আসলেই কি এই প্রক্রিযায় ঠিকে
থাকতে পারবেন ?পূর্বে বিএনপি যেমন চেষ্টা করেছিলো আপনারা যেমন টিকতে দেননি ,
ঠিক তেমনি বিএনপি জামাতকে আপনারা রাজাকার বললেও এরাও আপনাদের মত এইদেশের লুটপাটের রাজনীতির
বৃহৎ শক্তি, এই বৃহৎ শক্তিকে বাদ দিয়ে দেশকে অস্থিশীলতার মধ্যে ফেলে কতক্ষণ টিকে থাকা
সম্ভব।
বর্তমান
প্রধানমন্ত্রীকে গণতন্ত্রের মানসকন্যা বলা হলেও তিনি এক ভোটবিহীন নির্বাচনের সাংবিধানিক সরকার প্রধান কিন্তু গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধান নন।হয়তো বাধ্য হয়েই দেশের চলমান অস্থিরতার মধ্যদিয়ে এই অগণতান্ত্রিক সরকারের
অসম্মানের সহিত ক্ষমতার পতন ঘটবে, কিন্তু সেই ক্ষমতা অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের
মাধ্যমে সম্মানের সহিত হলে কতগুলো তাজা প্রান ঝড়ে না গিয়ে বাংলার আলো বাতাসে বেড়ে উঠতো। আপনাদের ভাষ্য অনুযায়ী আওয়ামী মতাদর্শ ব্যতিত সবাই
স্বাধিনতা বিরোধী শক্তি হলেও এই শক্তিকেও মানুষ ভোট দেয়, এদের মধ্যে থেকেও মানুষ প্রতিনিধি নির্বাচন করে।এদের উপেক্ষা করে কোন নির্বাচকে নির্বাচন বলা যায়না।তাছাড়া স্বাধিনতা বিরোধী
শক্তি,পাকিস্থানী দালাল,ভারতীয় দালাল,জঙ্গীবাদ এই শব্দগুলো আপনাদের মুখে এখন শুধুই
রাস্তায় দাড়ানো মলম বিক্রেতা ক্যানভাসারের ডায়ালগের মতই ।কারন বিএনপি ক্ষমতা থাকা অবস্থায়
দেশ পাকিস্থান হয়ে যায়নি আর আওয়ামী শাসন আমলে দেশ ভারত হয়ে যায়নি আর যাওয়ার কোন সম্ভাবনাও
নাই, কারণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ১৬কোটি মানুষের ৩২কোটি হাতই যতেষ্ঠ, সাধারণ মানুষ
চায় শুধু রক্তপাত ও হানাহানী ব্যতিরেখে সুষ্ঠ ও সমযথার মাধ্যমে আপনাদের ক্ষমতার দফারফা
হোক।জানি দেশের সরকার বিরোধী এই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হলেও দেশের সাধারণ শ্রমজীবী শ্রেনীর মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হবেনা, তবু একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের
দ্বারা ক্ষমতা লুটের এই সহিঞ্চতা বন্ধের মাধ্যমে মানুষ হত্যা বন্ধ হোক, স্বস্তি ফিরে
আসুক সবার দেহমনে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন