সূত্র অনুযায়ী পৃথিবীর সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পেশা কৃষক ও শ্রমিকের পেশা এবং পৃথিবীর সমস্ত পেশা গড়ে উঠেছে এই দুটি পেশার উপর ভিত্তি করে । পৃথিবীতে যে কর্মযজ্ঞ ও যা কিছু হচ্ছে তা এই দুটি পেশাকে কেন্দ্র করে।আজ অফিস আদালত, ব্যাংক বীমা,শিক্ষা, আবিষ্কার, রাষ্ট্র যন্ত্রের প্রতিটি বিভাগ, পৃথিবীর যাবতীয় ঘটনাপুঞ্জ এই দুটি পেশার উপর নির্ভরশীল।
কৃষকের উৎপাদন ও শ্রমিকের শ্রমেই গড়ে উঠে ব্যবসা বাণিজ্য, লেনদেন, কর্পোরেটদের স্যুট কোট টাইয়ের পরিপাটি পোশাক।যদি কখনো কৃষক তার খাদ্য উৎপাদন ও শ্রমিক তার পণ্য উৎপাদন কিছু দিনের জন্য বন্ধ করে দেয় তাহলে রাষ্ট্র তথা পৃথিবী যাবতীয় তন্ত্র মন্ত্র ,প্রণালী, পদ্ধুতি স্থবির হয়ে পড়বে।প্রয়োজনে বাঁচার তাগিদে ব্যাংকার ও কর্পোরেট কর্মীদের স্যুট কোট পরে মিল কারখানায় গিয়ে পণ্য উৎপাদন করতে হবে, প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি তার মন্ত্রী ও সচিবদের নিয়ে তুলতুলে চেয়ার ফেলে হাতুড়ী কাস্তে হাতে মাঠে নামতে হবে ।
কৃষক ও শ্রমিকের ঘাম যত বেশী ঝরে রাষ্ট্রযন্ত্রের চেয়ারগুলো তত বেশী নরম ও আরামদায়ক হয়ে ওঠে। অন্যদিকে কৃষক ও শ্রমিক যদি তার কর্মযজ্ঞ অব্যাহত রাখে অন্যদিকে অন্য পেশাজীবী মানুষ যদি তাদের কাজ কর্ম বন্ধ রাখে তাতে সামাজিক নিয়ম শৃঙ্খলার কিছুটা ব্যহত হলেও সমাজ বা রাষ্ট্রের ভিত্তির কোন ক্ষতি সাধন হবেনা ।কোন লেখক যদি মারা যায় তখন আমরা বলি তার জীবদ্দশায় ১০০টি বই লিখে গেছেন আমাদের জন্য। অভিনেতার ক্ষেত্রে বলি ২০০ সিনেমা করে গেছেন আমাদের জন্য।একজন কৃষক মারা গেলে আমরা কখনো কি এভাবে হিসাব করি , তার জীবদ্দশায় শ্রমে ঘামে আমাদের জন্য তিনি কত টন খাদ্য উৎপাদন করেছেন ,অথবা একজন কারখানা শ্রমিকের ক্ষেত্রে কি বলি তার জীবদ্দশায় এক লক্ষ পণ্য উৎপাদন করে আমাদের অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখে গেছেন এই মহান মানুষটি । দুঃখের বিষয় সমস্ত পেশার অভিভাবক, সবচেয়ে সম্মানিত কৃষক ও শ্রমিকের পেশা রাষ্ট্রীয় ভাবে আজও বৈষম্য ও অবহেলার স্বীকার। আজকের এই মে দিবসে আমাদের সকলের কাম্য, কৃষক শ্রমিক তার প্রাপ্য সম্মান নিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হোক এবং তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম আর বেগবান হয়ে উঠুক । ……
পৃথিবীর সমস্ত শ্রমজীবী মানুষদের প্রতি রইলো মহান মে দিবসের শুভেচ্ছা ……।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন