১।শিক্ষা সম্মান,
অজ্ঞতা অপমান।
সত্য সম্মান বাড়ায়,
অসত্যে মানুষ ব্যক্তিত্ব হারায়।
২। কারো জন্য জীবন দেবার প্রতিশ্রুতি ভালবাসা নয়,
ভালোবাসা সেটাই, অন্যের ইচ্ছে ও চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে নিজে ত্যাগ স্বীকার করা ।
৩। ধর্মীয় জ্ঞান মানুষকে শৃঙ্খলিত করে আর ধর্মীয় অজ্ঞতা হিংস্র করে তোলে।
৪। জীবনের প্রকৃত আনন্দ লুকিয়ে থাকে জীবনের মধ্যে, পদার্থের মধ্যে নয়। অথচ, আমরা জীবনকে সুখী করতে পদার্থের পেছনে ছুটতে ছুটতে জীবনের সীমিত সুন্দর সময়গুলো উপভোগ না করেই শেষ করে ফেলি।
৫। জ্ঞানের গভীরে প্রবেশকরা জ্ঞানীজনের সমালোচনার মধ্যেও শৈল্পিক সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।
৬। এই পৃথিবীতে কিছু মানুষ জন্ম গ্রহণ করে, যারা জীবদ্দশায় নিজের পরিবারের সম্পদ হয়ে পারেনা। কিন্তু মৃত্যুর পর এদের রেখে যাওয়া কর্মের দ্বারা সমাজ, রাষ্ট্র কখনো সমগ্র পৃথিবীর সম্পদ হয়ে ওঠে।
৭। কোন দর্শন বা কারো বিশ্বাস ও জীবনাচারণ নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করা এক ধরণের মূর্খতা ও মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ প্রকাশ করে।জ্ঞানী মানুষ যুক্তি দিয়ে এবং অন্যের চিন্তা ও বিশ্বাসের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে কথা বলে ।জীবনের কোন ব্যর্থতা ও অজ্ঞতা মানুষকে ব্যঙ্গাত্মক করে তোলে।নিজের পর্যবেক্ষণ এবং পৃথিবীর বড় বড় চিন্তাশীল ও জ্ঞানী মানুষদের লেখা ও বলা তাই প্রমাণ করে ।
৮। একটি জাতি গোষ্ঠীর মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধ থাকার পাশাপাশি বিজ্ঞান মনস্ক এবং যুক্তিবাদী হওয়াও অত্যন্ত জরুরী ।
৯। পৃথিবীতে দুই শ্রেণীর ধনী মানুষ রয়েছে।যাদের দ্বারা এই পৃথিবী নিয়ন্ত্রিত।এক শ্রেণী ধনের ধনী, অন্য শ্রেণী জ্ঞানের ধনী।আর এক শ্রেণীর উচ্চতর ধনী মানুষ রয়েছে যারা জ্ঞান দ্বারা ধন অর্জন করে ধন ও জ্ঞান উভয়ের অধিকারী হয়েছে।
১০। পৃথিবীর ধূর্ত মানুষগুলো নিজেদেরকে সবচেয়ে বুদ্ধিমান ভেবে থাকে। জ্ঞানীরা ধূর্তদের শঠতা বুঝতে পেরে নীরবে সাবধানতা অবলম্বন করে।এই নীরবতাকেই ধূর্তরা জ্ঞানীর নির্বুদ্ধিতা ভেবে থাকে। নীরবতার মধ্যেই যে জ্ঞানীর বিচক্ষণতা, ধূর্তদের গোবর মস্তিষ্কে এতোটুকু ধরার ক্ষমতা নেই বলেই, বারে বারে দূরদর্শী ও মহৎ মানুষদের সাথে চাতুরতার সুযোগ গ্রহণের চেষ্টা করে থাকে …।।
১১। জীবনের সংকট ও টানাপোড়নের সময়গুলো মানুষকে নানা ভাবে কষ্ট দেয়, কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেই মানুষ স্বপ্ন দেখতে শেখে এবং সামনে এগিয়ে যেতে সাহসী হয়ে ওঠে।এমন সময় একে অপরের উপর নির্ভরশীল হয়ে জড়াজড়ি করে মিলেমিশে জীবন যাপন করে।এই দুর্যোগকালীন সময়ে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মধ্যে ঘনত্ব থাকে ।
মানুষ জীবনের সংকট ও টানাপোড়ন ঘোচাতে, বাধা বিপত্তি মাড়িয়ে জীবনের কোন এক পর্যায় স্বনির্ভর হয়ে ভোগের সুখ সহজলভ্য করে তোলে।এ সময়,অতি আত্মনির্ভরতায় অনেকের মনের মধ্যে আত্মঅহংকার উদয় ঘটে, ফলে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমতে থাকায় আত্মার সম্পর্কগুলো হালকা হতে থাকে, এমন সময় মানুষ সম্পর্কের দূরত্ব বাড়ানোর সাথে সাথে নিজের একাকীত্বও বাড়াতে থাকে।
জীবনের বিরূপ পরিস্থিতিগুলো কষ্টদায়ক হলেও এর মধ্যে গভীরতর আত্মার সুখ নিহিত থাকে, যা ভবিষ্যৎ পার্থিব সুখের আশায় গুরুত্বহীন ভাবে হেলায় পাড়ি দিয়ে আমরা আত্মবঞ্চিত করে থাকি।
সু-সময়ের পার্থিব সুখের মধ্যে যখন আত্মার সুখ খুঁজি, অনেক সময় তা জীবন থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে।
১২। প্রেমহীন জীবন শুষ্ক মরুভূমির মত।জীবনে সুন্দর অনুভূতি নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য প্রেম অপরিহার্য।সে প্রেম হোক ঈশ্বর, প্রকৃতি,সমাজ, রাষ্ট্র, আদর্শ,শিল্প সংস্কৃতির প্রতি, পিতা মাতা, সন্তান বা প্রিয় কোন বন্ধুর প্রতি কিংবা স্বামী স্ত্রী, বা প্রিয় কোন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন নারী অথবা পুরুষের প্রতি।অন্তরে প্রীতি,স্নেহ,ভালোবাসা ও ভক্তির ভাব মিশ্রিত অনুরাগের উপস্থিতি অনিবার্য।.....।
১৩। কোন মানুষের মধ্যে যখন প্রাপ্তির প্রশান্তি চলে আসে, তখন তার সৃষ্টি ও অর্জনের ধার ভোতা হতে থাকে।
১৪। সর্বপ্রিয় বা সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি কখনোই সর্বোৎকৃষ্ট বা সর্বোত্তম মানুষ নয়। সর্বোত্তম মানুষ সেই, যিনি দৃঢ় চিত্তে সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থে অপ্রিয় সত্য প্রকাশ করে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর অপছন্দের মানুষ হয়ে ওঠেন।
সর্বপ্রিয় হওয়ার প্রবণতা মানুষের সত্য বলার সাহস নষ্ট করে দেয়।সর্বজন সম্মানিত মানুষ অনেক সময় চোখের সামনে সমাজ ও রাষ্ট্রে সংগঠিত অন্যায় ও অপকর্মের প্রতিবাদ না করে নীরব ভূমিকা পালন করেন,কারণ এমন মানুষেরা ভাবেন সত্য বলার জন্য তিনি অনেকের অপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেন এবং তার ব্যক্তি ইমেজ নষ্ট হতে পারে।এমন প্রবৃত্তির মানুষ কখনো অন্যের কাছে অধিকতর গ্রহণযোগ্যতা ও আস্থা অর্জন করতে মিথ্যা আশ্রয়ও গ্রহণ করে থাকে।
১৫। প্রতিষ্ঠাতা শব্দটি আপনি তখনি নিজের করে বলতে পারেন, যখন আপনার নিজ অর্থ, উদ্যোগ,শ্রম ঘাম,মেধা ও ত্যাগে কোন প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন গড়ে ওঠে......।।
কিন্তু নিজ উদ্যোগের পর অন্যের শ্রম ঘাম,মেধা,অর্থ ব্যবহার করে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কোন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পর যখন ঘোষণা দেন আমি এই প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা তখন আপনার চরিত্রে লুকিয়ে থাকা হীনমন্য,কপট,স্বার্থপর স্বভাবগুলো প্রকাশ পেয়ে যায় ……।
১৬। ন্যায় ও নীতি কথা সুন্দর করে বলতে পারা একটি শৈল্পিক গুণ,
ন্যায় ও নীতিকে চরিত্রে ধারণ করে জীবন যাপন হচ্ছে মহত্ত্ব।
কখনো, একজন ভণ্ড মানুষও অসাধারণ শৈল্পিক গুণের অধিকারী হতে পারে,
কিন্তু সাধক না হলে মহামহিম গুনের অধিকারী মানুষ হওয়া সম্ভব নয়।
১৭। বার্ধক্যে শারীরিক সৌন্দর্য হারানো প্রবীণ ফেলে আসা দিনের মহৎ কর্মের মধ্য দিয়ে অর্জিত ব্যক্তিত্বের দ্বারা তারুণ্য দীপ্ত যৌবনের দ্যুতির চেয়েও বেশী উজ্জ্বল হয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করে পারে ।
১৮। এই পৃথিবীতে যার হাতে লাঠি,
তিনিই নাড়েন ন্যায় অন্যায়ের কলকাঠি।
১৯। পৃথিবীর প্রতিটি নষ্ট ও নিষিদ্ধ জিনিসের মজা তীব্র,ব্যাপ্তি সাময়িক কিন্তু এর পরিণাম ভয়াবহ এবং ব্যাপ্তি হয় সুদীর্ঘ ......।
২০।মানুষ মূলত ততক্ষণ পর্যন্তই অন্যের সঙ্গে থাকার প্রয়োজন অনুভব করে,
যতক্ষণ পর্যন্ত তার প্রয়োজন থাকে।
২১।কবি বুদ্ধদেব গুহের চিঠি কবিতার শেষের দিকের দুটি লাইন,
" যার বিবেক বেঁচে থাকে, তার সুখ মরে যায়।
সুখী হবার সহজ উপায় বিবেকহীন হওয়া।"
বিবেক সম্পন্ন মানুষ হলে, উপহার স্বরূপ জীবনে দুঃখ কষ্ট অবধারিত।
তবুও বিবেকটাকে জাগিয়ে রাখতে হয়,
মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য।
২২।অন্যায়ের মূল শেকড়কে টিকিয়ে রাখার সংগ্রামে যাদের ভূমিকা অগ্রণী,
তাদের কণ্ঠেই রাষ্ট্র ও সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার অমেয় বাণী .........!
২৩।শুধু খেয়ে পড়ে উদর পূর্তি করে বেঁচে থাকার নাম স্বাধীনতা নয়
অধিকার ও আত্ম মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার নাম স্বাধীনতা।
২৪।পেশা,শিক্ষা,সম্পদের স্তর বিন্যাস করে মানুষকে মূল্যায়ন করেন যিনি ,
অসুন্দর ,অসম্পন্ন মানুষ তিনি ।
সদাচারণ,সততা, ন্যায়-পরায়ণ গুন বিচারে মানুষকে মূল্যায়ন করেন তিনি ,
প্রকৃত প্রাজ্ঞ জন যিনি ।
২৫।আপনার মাথার উপর আচ্ছাদন আছে
তিন বেলা খাবার সংস্থান আছে
পরনের কাপড় বদলাবার সামর্থ্য আছে
অসুখ-বিসুখে ডাক্তারের সেবা নিয়ে ঔষধ কিনতে পারেন
অথচ ,অন্যের অর্থ-বিত্তের দিকে তাকিয়ে নিজেকে অসুখী অনুভব করেন
।। আপনি আসলে সুখের অসুখে সংক্রমিত ।।
২৬।যে রাষ্ট্রের জনগণের প্রতি দায়িত্ব নেই, জনগণেরও রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ও ভালোবাসা নেই, সেই রাষ্ট্রের ঘুষ দুর্নীতি অনিয়ম ও লুটে খাওয়ার চিত্র দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
২৭।অসততার উপর প্রতিষ্ঠিত কোন নেতৃত্বে আসীন হয়ে সততা ও নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি হাস্যকর।
২৮।জ্ঞান মানুষকে মহৎ করে এবং সুশিক্ষিত মানুষ হয় আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ।
২৯।দাসত্বের সমাজে ভোগবাদী, সুবিধাবাদী মানুষ দান খয়রাত করে নাম ফুটিয়ে মহান মানুষ সাজে এবং সমাজে রাজা হয়ে ঘুরে বেড়াতে চায়।
অন্যদিকে প্রকৃত মহান মানুষেরা সুবিধাবাদী ও ভোগবাদী সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং সুষম বণ্টনের সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে প্রতিটি মানুষকে দান খয়রাতের পরিবর্তে সম্মানজনক জীবন জীবিকা উপহার দিয়ে নীরবে নিভৃতে আত্মার সুখ উপভোগ করে।
৩০।যে মানুষ আপনার ত্যাগ ও উদারতার মূল্য বোঝেনা, তার জন্য ত্যাগ স্বীকার করে যাওয়া অর্থহীন।
আমাদের সমাজের প্রেক্ষাপটে জীবন সংসারে একজনের জীবনের সুখ রচিত হয় অন্যের ত্যাগ ও স্বপ্নের উপর ভর করে।সুখের নাগাল পাওয়া অধিকাংশ মানুষই অন্যের ত্যাগের কষ্ট অনুধাবন করতে পারেনা।
৩১।দুইশত বই লিখে লেখক স্বীকৃতি নাও জুটতে পারে, আবার সারা জীবনে মানুষের মনে দাগ কাটার মত ২০০ পৃষ্ঠার একটি বই লিখে লেখক জীবন ধন্য হতে পারে।
৩২।গোষ্ঠী স্বার্থের রাজনৈতিক চক্রের আবর্তে বাংলাদেশ।এই চক্র থেকে বাংলাদেশকে বের করে না আনতে পারলে সাধারণ মানুষের মুক্তি নেই ।আর এই কাজটি সাধারণ মানুষের স্বার্থে সাধারণ মানুষকেই করতে হবে।গোষ্ঠী স্বার্থের রাজনৈতিক শক্তিকে প্রতিপক্ষ করে গণ-মানুষের স্বার্থের রাজনৈতিক লড়াই ঘোষণা এখন সময়ের দাবী।
৩৩।কোন চিন্তা,দর্শন বা মতাদর্শ যদি নিজের চিন্তার সাথে সাংঘর্ষিক হয় সেটাকে যৌক্তিক ভাবে সম্মানের সহিত খণ্ডন করা হচ্ছে সমালোচনা।
অপরদিকে নিজের চিন্তার সাথে সাংঘর্ষিক কোন চিন্তা,দর্শন ও মতাদর্শকে ব্যঙ্গ বা অসম্মান করে প্রকাশ করাই হচ্ছে বিদ্বেষ।
আমাদের দেশে সমাজ থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত বিদ্বেষ চর্চা হয়,সমালোচনা করার মত উপযুক্ত জ্ঞান সম্পন্ন মানুষের সংকটের কারণে গঠনমূলক সমালোচনা হয়না।একটি পরিবর্তনশীল সমাজ বিনির্মাণে সমালোচনা চর্চা ও সমালোচনা করার সুযোগ সৃষ্টি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
৩৪।সাম্প্রদায়িক মানসিকতা ও হীনমন্যতা নিয়ে কখনো মানুষের অনুভূতির সুগভীরে প্রবেশ করা যায়না।
৩৫। জয় দিয়ে শুরু
হার দিয়ে শেষ
তবুও আমাদের বাঘের বাংলাদেশ।
(প্রসঙ্গ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯)
৩৬। মেঘ যেমন সূর্যের আলোকে আড়াল করে দেয়, তেমনি আত্ম অহংকার ও দম্ভ মানুষের ভালো গুণগুলোকে ঢেকে দেয়।
৩৭। একজন খুনিকে আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার না করে সরাসরি খুন করা হলে তার খুনি হয়ে ওঠার শক্তি সাহস যোগানদাতাদের গল্প ঢাকা পড়ে যায়।ফলে খুনের বিষবৃক্ষ ফলন দিতেই থাকে।বিষবৃক্ষের মূল শিকড় কেটে ফেলতে না পারলে সামাজিক স্থিতিশিলতা আনা কখনোই সম্ভব নয়।
৩৮। নিজ দেশে জামাত বিরোধী আন্দোলন করি,
ভারতের মোদী'র জয়ে প্রশান্তির ঢেকুর তুলী,
আমিই মৌলবাদ বিরোধী স্বাধীনতার পক্ষের খাটি প্রগতিশীল শক্তি।
৩৯। এই পৃথিবীতে সবকিছুর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হয় না।
নিজের কোন কথা, কর্ম বা আচরণ অন্যের কষ্টের কারণ হয়েছে অথবা কোনো ভাবে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মনে রাখতে হবে শুধু সময়ের ব্যবধানে একই ঘটনা বা পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি নিজের জীবনে অপেক্ষা করছে।সুতরাং কথা,কর্ম এবং আচরণে সংযমী, সাবধানী এবং বিবেচক হওয়া বাঞ্ছনীয়।
আবার অন্যের জন্য ত্যাগ পুরষ্কার হয়ে ধরা দেয় এই জীবনেই ……
এই পৃথিবীতে পার্থিব জীবনের নিয়ম নীতির বাইরেও অদৃশ্য দেনা পাওনার হিসাব নিকাস চলে যা আমাদের চর্ম চোখে ধরা পড়ে না।
( জীবনের একান্ত পর্যবেক্ষণ )
৪০। নিজ ধর্মের মানুষ হত্যায়
প্রতিবাদে ফাটি।
অন্য ধর্মের মানুষ হত্যায়
মনে মনে হাসি।
চুপচাপ আমিও যে
ধর্মীয় সন্ত্রাসী,
সে কথা কখনো কি একবারও ভাবি ?
৪১।স্রষ্টার সৃষ্টিকে ধ্বংস করে স্রষ্টার সান্নিধ্য বা প্রিয় হওয়ার মূর্খ ধারণার চেয়ে নিকৃষ্ট চিন্তা আর কি হতে পারে।
৪২। জীবনের কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বা লক্ষ্যে পৌঁছানোর মনস্থির করলে, উচিত স্বীয় লক্ষ্যে না পৌঁছুনো পর্যন্ত পরিকল্পনা মাফিক নীরবে এবং একাগ্র চিত্তে অধ্যবসায় চালিয়ে যাওয়া।যদি কখনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কারো পরামর্শ বা নির্দেশনার প্রয়োজন হয় তাহলে নিজের থেকেও কোন যোগ্য এবং বিজ্ঞ মানুষের দ্বারস্থ হওয়া শ্রেয়।এমন মানুষেরা অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে উদারতার সহিত পথ নির্দেশ করে থাকে এবং অনুপ্রেরণার মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের পথকে মসৃণ করে দেয়।
সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে অযোগ্য এবং অপরিপক্ব মানুষদের নিকট পরামর্শের জন্য দ্বারস্থ হওয়ার ক্ষেত্রে, কারণ এমন মানুষের শরণাপন্ন হলে তার অযোগ্যতা ও ব্যর্থতার প্রভাব আপনার উপর বিস্তার করে আত্মবিশ্বাস নষ্ট করবে। অনেক ক্ষেত্রে পরিকল্পনা নষ্ট করে দেওয়ার জন্যও ভূমিকা রাখতে পারে।
মানুষ মূলত কোন যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা নিয়ে পৃথিবীতে জন্মায় না এবং কোন কিছু শুরুও করে না। মানুষ তার পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা এবং প্রয়োজন ও ইচ্ছে অনুযায়ী নিজেকে প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্য যোগ্য ও অভিজ্ঞ করে গড়ে তোলে।এভাবেই পৃথিবীর যাবতীয় অসাধ্যকে সাধন করে এগিয়ে যাচ্ছে মানুষ।
( কথাগুলো একান্তই নিজ জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে)
৪৩। আমাদের জাতিগত মানসিকতায় প্রাণের থেকে পদার্থের মূল্য বেশী। তাই পদার্থ উপার্জন করতে শত শত প্রাণের বিনাশ ঘটানো মামুলি বিষয় মাত্র।প্রাণহীন পদার্থ উপার্জনের নেশায় প্রাণের গুরুত্ব ভুলে গিয়ে আজ জাতীর প্রাণই বিনাশের পথে।
৪৪। মানব সম্পর্ক বড়ই বিচিত্র! বছরের পর বছর বুকের সাথে বুক মিলিয়ে কাটিয়ে দিয়েও আত্মার সংযোগ ঘটেনা, আবার কখনো চোখের দেখা না হয়েও আত্মার টানে জীবন দিতেও প্রস্তুত হয়ে যায় ...।। প্রচলিত সামাজিক নিয়মের সম্পর্কগুলোকে আত্মীয় বলা হলেও মূলত স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে আত্মার সাথে আত্মার মিলন ঘটে যার সাথে তিনিই বস্তুত পরম আত্মীয়।সেটি প্রচলিত আত্মীয় সম্পর্কের কারো সাথে হতে পারে আবার জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ও বৃত্তের বাইরের কোন মানুষের সাথেও গড়ে উঠতে পারে ।
৪৫। মানব সম্পর্ক দুই ধরণের।একটি প্রচলিত সামাজিক নিয়মের, অপরটি আত্মার।
৪৬। মিথ্যা ও অসততার উপর প্রতিষ্ঠিত কোন শক্তির ভালো কাজের প্রশংসা আর মন্দ কাজের সমালোচনা বিশেষ কোন তাৎপর্য বহন করেনা।
৪৭। আমাদের পিঠে অসত্যের হিংস্র থাবা...
৪৮। সত্য বলার সাহস না থাকলে নীরব থাকুন। কিন্তু, অসত্যকে সত্য রূপে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে নিজের সত্তাকে অপমান করবেন না।
৪৯। একজন ডাকাত দলের সর্দারের দু:সাহসীকতা,দূরদর্শিতা এবং চাতুর্য গুনের জন্য দলের সদ্যসদ্যের মধ্যে বীরের সম্মানে সম্মানিত হলেও সাধারণ মানুষ ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তিনি ঘৃণিত,অসম্মানিত এবং অভিশাপের পাত্র।
৫০। অসত্যের অর্জনের মধ্যে ভোগের আনন্দ থাকে কিন্তু আত্মতৃপ্তির প্রশান্তি থাকেনা, থাকে গ্লানি, মানুষের ঘৃণা।
৫১। কোন প্রকার আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে ভোট দিলেন মানে আপনার মাতৃভূমিকে দুর্বৃত্তদের কাছে বিক্রি করে দিলেন।
৫২। এক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দালালী করে ক্ষণিকের জন্য নিজে ভালো থাকা যায়, কিন্তু দেশ ও জাতি সমৃদ্ধ হলে সবাই ভালো থাকা যায়। পৃথিবীর নেতৃত্ব প্রদানকারী দেশ ও জাতি তার দৃষ্টান্ত।
শ্লোগান হোক
ইট ,পাথর, কাঠ, কনক্রিটের সরকার নয়, মানবিকতার দ্বার উন্মোচনের সরকার চাই ……।
৫৩। একজন ব্যবসায়ী খুঁজে মুনাফা,
শিল্পী খুঁজে তারকা খ্যাতি ,
খেলোয়াড় খুঁজে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার আর মেডেল,
আমলা খুঁজে পরিপাটি চেয়ার, মোটা অঙ্কের বেতন
কিন্তু যে মানুষটির মুনাফার মনোবৃত্তি নেই,
নেই তারকা খ্যাতির সুপ্ত বাসনা বা ম্যাচ সেরা পুরস্কারের আকাঙ্ক্ষা,
অধনস্থ ঘেরা নির্দেশের নরম চেয়ারের স্বাদ যার কাছে তুচ্ছ, তিনিই রাজনৈতিক,
মানুষের সমস্যা,শঙ্কট, সমাধান ও সম্ভাবনা যিনি অন্তর দৃষ্টি দিয়ে দেখতে পান,
তিনিই রাজনৈতিক।
৫৪। শুরুতেই তাহার প্রেমে পড়িয়া ছিলাম রূপে মুগ্ধ হইয়া।আতিথেয়তা ও উদারতায় কখনো মনে হয়নি আমি তাহার ঘরে একজন অপরিচিত আগুন্তক মাত্র।কোন একসময় তাহার ঘরের মানুষ হইবার দুঃসাহস হৃদয়ে জাগিয়া বসিলো।ভাবিয়া দেখি নাই আমি তাহার গ্রহণ করিবার যোগ্য মানুষ কিনা।তাহাকে পাওয়ার যোগ্যতা প্রমাণের শর্তের সিঁড়িগুলো একেবারে মসৃণ নয় কিন্তু তাহাকে পাওয়ার দুরন্ত আকাঙ্ক্ষা সেই শর্তের বেড়াজাল ছিঁড়তে দুঃসাহসী করিয়া তুলিয়াছিল আমাকে।শর্তের নিয়মকানুন পূরণ করিয়াই নির্ধারিত ফর্মে আমার পূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত উল্লেখ করিয়া তাহার ঘরের অতিথি থেকে আপন মানুষ হইবার ইচ্ছা পোষণ করিয়া একটি বড় খামে চিঠি পাঠাইয়াছিলাম।দুই মাস পর পত্রের প্রাপ্তি স্বীকার পত্র হাতে আসিয়া পৌছুলো।পত্রে উল্লেখ করিয়াছিল সাক্ষাতের তারিখ পরবর্তীতে পত্র মারফত জানাইবে।প্রতীক্ষার দিন প্রহর পার করিতে করিতে দশ মাস পার হইবার পর তাহার সাথে সাক্ষাতের দিন ক্ষণের পত্র হাতে পাইলাম।সাক্ষাৎকারটা ভালোই হইয়াছিল, বলিয়াছিল তাহার ইচ্ছার কথা ভাবিয়া চিন্তে বেশকিছু দিন পর পত্র মারফত জানাইবে।ইহার পর থাকিয়া তাহার পত্রের আশায় দুরু দুরু বুকে প্রায় প্রত্যহই ডাক বাক্স খুলিয়া তাহার চিঠি খুঁজি,। চিঠির বাক্সে নানান চিঠি আসিয়া ভরিয়া থাকে কিন্তু তাহার চিঠি পাইনা।সুদীর্ঘ প্রতীক্ষায় প্রায় হতাশ হইয়া ভাবিতেছিলাম আমি হয়ত তাহার পছন্দের মানুষ হইবার পারি নাই।কিন্তু না, আজ চিঠির বাক্স খুলিয়া দেখি অন্যান্য চিঠির মধ্যে ছোট্ট একটি সাদা খাম, প্রেরকের ঠিকানা দেখিয়া বুঝিতে পারিলাম এটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত তাহার চিঠি।খাম খুলিয়াই দেখি সে লিখিয়াছে ……
J’ai le plaisir de vous informer que vous avez acquis nationalité français depuis le …/…/2018
I am pleased to inform you that you have acquired French nationality since ... / ... / 2018
ভালোবাসি তোমায় ,
প্রত্যাশার কোন অপ্রাপ্তি রাখনি .....
( প্রসঙ্গঃ ফরাসি নাগরিকত্ব অর্জন)
৫৫। শিল্পী মমতাজ জাতীয় সংসদে গিয়ে আইন বানায়। সেই আইন পড়ে অনেকে উকিল, ব্যারিস্টার,জজ হয়ে আইন আদালত চালায় ।উকিল,ব্যারিস্টার,জজ হওয়ার জন্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হয় কিন্তু আমাদের দেশে আইন বানানোর জন্য পড়াশোনা না করে বাঊল গান গাইলেও চলে।
৫৬। আইন তৈরির মূল উদ্দেশ্য জনগণকে সুরক্ষা দেয়া,কিন্তু আমাদের দেশে আইন তৈরি ও ব্যবহার হয় গোষ্ঠী স্বার্থ রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন নিয়ে খেলা ও হয়রানীর উদ্দেশ্যে।অবৈধ টাকা পয়সা অর্জনের মধ্যদিয়ে দেশে এতো পরিমাণ সামাজিক মর্যাদা সম্পন্ন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে যে কোন কথা দ্বারা তাদের সম্মানে একটু হানি হলেই শত শত কোটি টাকার মামলা হয়ে যায়।যে টাকা বৈধ ভাবে আয় করে অভিযুক্ত ব্যক্তির কয়েক জনম ভরেও পরিশোধ করা সম্ভব নয়।রাষ্ট্রীয় আইন হোক জনস্বার্থের ও সম্মানের, খেলা করার জন্য নয় ।
৫৭। ভোটের জন্য ওরা যদি বাম,ডান,নাস্তিক,আস্তিক,মোল্লা,পুরোহিত,মৌলবাদী,প্রগতিশীল,চেতনাধারী ,চেতনাহীন,রাজাকার,মুক্তিযোদ্ধা সবার সাথে সখ্যতা গড়তে পারে, তাহলে আমরা কেন ওদের পক্ষ নিয়ে একে অপরের মধ্যে আদর্শের দ্বন্দ্বে জরিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করি?
৫৮। বাংলাদেশের সংবাদ মিডিয়া আর বিজ্ঞাপনী সংস্থার মধ্যে এখন খুব একটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বিজ্ঞাপনী সংস্থা পণ্যের বিক্রয় বাড়ানোর জন্য অর্থের বিনিময়ে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপন বানায়, আর দেশের অনেক সংবাদ মিডিয়া ক্ষমতা দখলের রাজনৈতিক দলের জন্য অর্থের বিনিময়ে সংবাদ বানায়।তবে দেশের মানুষ বিজ্ঞাপন দেখে পণ্যের গুণাগুণ নির্ণয় করতে না পারলেও অর্থের বিনিময়ে বানানো বিজ্ঞাপনী সংবাদ বা মোসাহেবি সংবাদের মান নির্ণয় করা ঠিকই শিখে ফেলেছে।
৫৯। যদি কোন বিশ্বাস বা আদর্শ অনুসরণের ফলে আপনার মধ্যে হিংসা, বিদ্বেষ, হিংস্রতা এবং শ্রেণী বৈষম্য মানসিকতার উদয় ঘটায়, তাহলে বুঝবেন আপনি হয়তো আপনার ধারণকৃত বিশ্বাস বা আদর্শের বিধিবিধানের গভীরে যেতে পারেননি, নতুবা আপনি ভ্রান্ত আদর্শ বা বিশ্বাসের মায়াজালে অন্ধ হয়ে আছেন।
৬০। আমাদের মধ্যে কিছু মানুষ রয়েছে যারা কাঠামোগত দিক থেকে মানুষের মত হলেও এদের মস্তিষ্কের গড়ন বা আকৃতি ষাঁড়ের মস্তিষ্কেরর মত।
এমন লোকেরা যুক্তির নিরিখে পরাস্থ হলে ষাঁড়ের মতই সিং দিয়ে ঢুস দেবার জন্য অন্যের দিকে তেড়ে আসে।
৬১। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিটি বক্তৃতায় দেশের দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর ও মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ পেত। বলতেন , আমার অভাবী দুঃস্থ জনগণের জন্য বিদেশ থেকে আমাকে ভিক্ষা করে আনতে হয় আর এই চোরের দল আমার দুঃখী মানুষের সর্বনাশ করে এরা লুটতরাজ করে খায়। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ উপার্জন করে রাষ্ট্রকে দেয় সেই অর্থও চোরের উত্তরসূরিরা এখনো লুটেপুটে খায়।কিন্তু, একই দল ও তারই পরিবারের হাতেই রাষ্ট্রের নেতৃত্ব,নেই শুধু তার মত করে চোরদের বিরুদ্ধে কথা বলা ও ব্যবস্থা নেবার মত একজন নেতা। তার সাথে বর্তমান নেতার পার্থক্য এইটুকু তিনি চোরের উত্তরসূরিদের রক্ষার্থে কথা বলেন।
৬২। কোন অন্যায় জুলুম ও অনিয়মকে রুখতে নিজেকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করলে, প্রথমে নিজের মধ্যে অনিয়মের যে ছিটেফোঁটা রয়েছে সে গুলোকে পরিষ্কার করতে হয় এবং নিজের মধ্যে যে পশুর বসবাস তাকে গভীর নিদ্রায় দমিয়ে রাখতে হয়।
৬৩। লড়াই হবে ধরে রাখার, কেড়ে নেবার এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার ।
৬৪। বুকের মধ্যে যদি দেশপ্রেম ও সততা থাকে তাহলে দেশকে সঠিক পথে ধাবিত করতে বয়স আটষট্টি হওয়ার প্রয়োজন নেই, আঠারো হলেই যথেষ্ট।
৬৫। রাষ্ট্র যন্ত্রের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ যখন পচে গলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে তখন পচনধরা গলিত শরীরকে সুস্থ করার দায়িত্ব যে আমার এই বোধ বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে জাগ্রত হচ্ছে দেখে আশাবাদী হচ্ছি। মনে হচ্ছে দেশ হয়তো গুটিকয়েক ডাকাত ও তার দোসরদের গোলামীর হাত থেকে বেড়িয়ে আসতে খুব বেশী সময় নেবেনা। দেশ কোন ব্যক্তি বিশেষ বা গোষ্ঠীর নয় দেশ আমার, দেশ তোমার।নিজের অধিকার নিয়ে বেছে থাকার স্বার্থে দেশকে সুস্থ করার দায়িত্ব আমার এবং তোমার ।সংগ্রামের বীজ রোপিত যে জাতির শরীরে সে জাতিকে অবরুদ্ধ করে রাখার দুঃসাহস কার ।এগিয়ে যাও আমার মাতৃভূমি ………।।
(প্রসঙ্গ নিরাপদ সড়ক আন্দোলন)
৬৬। এক সময় ইতিহাস রচিত হতো।কালের বিবর্তনের সাথে সাথে সেই ইতিহাসের সত্যতা নিয়ে তৈরি হতো বিতর্ক। ইতিহাস রচনাকারীদের পক্ষপাতিত্বে কখনো ইতিহাসের খলনায়ক হয়েছে নায়ক আবার নায়ক হয়েছে খলনায়ক। কিন্তু আমরা আজ এমন এক যুগে এসে পৌঁছেছি যে এখন আর পক্ষপাতিত্ব ইতিহাস রচনাকারী দিয়ে ইতিহাসের নায়ক হওয়া প্রায় অসম্ভব কারণ এখন ইতিহাস ভিডিও হয়, তাই সময় অতিবাহিতের সাথে সাথে ইতিহাস বিকৃত করা আর সম্ভব হবেনা। চলমান ঘটনা ভিডিও হচ্ছে এই জীবন্ত রেকর্ডগুলোই নতুন প্রজন্মের কাছে অদূর ভবিষ্যতে নির্ধারণ করবে আমাদের ইতিহাসের নায়ক এবং খলনায়ক ।
৬৭। পৃথিবীর কট্টর আদর্শবাদী মানুষ ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে কখনো চরম ভয়ংকর। কারণ, এরা নিজস্ব মতাদর্শ ও বিশ্বাসের বাইরে অন্য চিন্তাধারা ও আদর্শের মানুষের বিশ্বাসের চরম অবমূল্যায়ন করে এবং নিজস্ব বিশ্বাস ও আদর্শ সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে অন্য বিশ্বাসের মানুষকে হত্যা করাটাকেও কখনো ন্যায় বলে মনে করে ।
৬৮। সৎ পরিশ্রম প্রাপ্তি ও প্রশান্তি আনে, আর কর্মহীন সময় হতাশা আনে ।
৬৯।পৃথিবীতে যে সব মানুষ যে বিশ্বাস, নীতি ও আদর্শ নিজ চরিত্রে ধারণ না করে , অন্যদের উপর আদর্শের ফুল ঝুড়ি ফোটায়, বই এর মলাটে নীতি ও আদর্শের বাণী লিপিবদ্ধ করে সমাজ সংস্কারের স্বপ্ন দেখায় ,এরা কিছু সময় জীবদ্দশায় প্রতিভার মূল্যায়নে তারকা খ্যাতি অর্জন করলেও তার মৃত্যুর পর তার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়, কারণ প্রতিটি মানুষের মৃত্যুর পর সমাজের সাধারণ মানুষ তার কর্মজীবন ও ব্যক্তি জীবনের বিশ্লেষণ শুরু করে সেই বিশ্লেষণে প্রকৃত আদর্শিক মানুষরাই এক একটি আদর্শ রূপে নতুন স্বরূপে মানব সমাজে অস্তিত্ব লাভ করে। আর ভণ্ডদের বইয়ের মলাটের আদর্শের বাণী হয় নিতান্তই উই পোকার আহার ।
৬৯।আমাদের সমাজে তত্ত্ব ও জ্ঞানের কথা জ্ঞানের ভাষায় আমরা অনেকের কাছ থেকেই শুনী কিন্তু তার প্রয়োগ সমাজ তথা ঐ তাত্ত্বিক ব্যক্তির জীবনেও দেখা যায়না। বর্তমান রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ব্যক্তি মানুষ কেমন, কোন রাজনৈতিক আদর্শের সেই বিতর্কে যাবনা, তবে তার সরল স্বীকারোক্তি আমাদের বর্তমান সামাজিক অবস্থায় একটি আদর্শ। আমরা জীবনের সাফল্যের কথা বলি, সাথে একটু বানিয়ে রঙ লাগিয়েও থাকি, কিন্তু জীবনের ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি দেয়ার সাহস কতজন রাখি । রাষ্ট্রপতির বক্তব্য কারো কাছে ব্যর্থ ছাত্রের গল্প মনে হলেও আমার কাছে মনে হয়েছে সাময়িক ব্যর্থতা মানে জীবনের চূড়ান্ত ব্যর্থতা নয় আর সাময়িক সাফল্য মানেই জীবনের চূড়ান্ত বিজয় নয়। তাই জীবনের কোন অংশের পরাজয়কে মনে স্থান না দিয়ে স্বীয় লক্ষ্যে কাজ করে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যেই জীবনের চূড়ান্ত সাফল্য নিহিত ।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত বুদ্ধিমান মানুষ যারা তারা অবশ্যই সরল এই স্বীকারোক্তি মূলক কথাগুলোর মধ্য থেকে তা অনুধাবন করতে পেরেছেন।
৭০। ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে ভালো ডিগ্রি অর্জন করা আর নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন করা এক বিষয় নয় । একজন কাণ্ডজ্ঞান সম্পন্ন মানুষ অনেক সময় একটি জাতি, কখনো বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার উপযুক্ত মানুষ হয়ে উঠে । অন্যদিকে, একজন পিএইচডি ডিগ্রি ধারী’র ভালো গবেষক বা অফিসিয়াল হতে দেখা গেলেও অনেক সময় নিজের পরিবারকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অক্ষমতা প্রকাশ পায়। ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে অর্জিত জ্ঞান পেশাগত ও বাস্তব জীবনে প্রয়োগে ব্যর্থ অহংকারী মানুষ থেকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাহীন বা স্বল্প শিক্ষিত সৎ সফল ও জনকল্যাণে নিয়োজিত মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ এবং সন্মানিত।
৭১। বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ সরকার যে ভাবে দেশের বড় জেলা শহরগুলোকে বিভাগীয় শহরে রূপান্তর করে মানুষকে খুশী করছে, তাতে মনে হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে দেশের সব মানুষকে খুশী করার জন্য আমাদের জনগণ বান্ধব সরকার সবগুলো জেলা শহরকে বিভাগীয় শহরে রূপান্তর করবে এবং সব উপজেলা ও থানাকে জেলা শহরে ,প্রতিটি ইউনিয়নকে উপজেলায় ও ওয়ার্ডগুলো এক একটি পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদে রূপান্তর করলে অবাক হবোনা ………
আসলে দেশে এতো বিভাগীয় অঞ্চলের প্রয়োজন আছে কি?
আর বিভাগীয় শহরে রূপান্তর হলে ঐ অঞ্চলের মানুষের লাভ কি? আর এতো খুশী হবারইবা কি আছে ?
দেশের যে স্থানেই বসবাস করিনা কেন আমার নাগরিক অধিকার ও সুবিধা সুনিশ্চিত হচ্ছে কিনা সেটাই আসলে ভাবার বিষয় এবং সেই অধিকার আদায়ের আন্দোলন ও সফল হবার মধ্যেই আনন্দ।
৭২। ফিদেল কাস্ত্রোর কোনো মূর্তি বানানো হবে না। শহরের গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের নামকরণও হবে না তাঁর নামে। এটিই ফিদেলের ইচ্ছা ছিল।’ বড় ভাইয়ের এই ইচ্ছার কথা যখন কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো জানাচ্ছিলেন, তখন উপস্থিত জনতা বলে উঠল, ‘আমিই ফিদেল’।
রাউল কাস্ত্রো বলেন, এসব কারণেই ফিদেল নিজেই একটি দৃষ্টান্ত।
মূলত যে সব নেতাদের মনে ভয় ও সংশয় থাকে যে, তাঁর মৃত্যুর পর মানুষ তাকে স্মরণ করবেনা এবং তাঁর কৃতকর্মের জন্য বরং ধিকৃত হতে পারেন তারা রাস্তা,বিল্ডিং এর নাম ফলকে ,পাঁথরের মূর্তির অবয়বে,আইন করে ছবির ফ্রেমে মানুষের মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে মরিয়া হয়ে ওঠেন।অপরদিকে যে সব নেতারা মানব মুক্তির মহান আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে,নিজের বিশ্বাস এ অবিচল থেকে আমরণ সংগ্রাম করে মানুষের আলোর পথ দেখান তারা রাস্তা,বিল্ডিং এর নাম ফলকে ,পাঁথরের মূর্তির অবয়বে,আইন করে ছবির ফ্রেমে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকার এই পন্থাকে প্রত্যাখ্যান করেন কারণ তারা বিশ্বাস করেন তাঁর জীবনকর্ম ও রেখে যাওয়া আদর্শ তাকে স্থান দেবে মানুষের অন্তরে,মানুষের চিন্তা ও চেতনার মাঝে বেঁচে থাকবেন হাজার হাজার বছর।
৭৩। অসাম্প্রদায়িক চেতনার রূপে নিজের অন্তরের গহীনেই মৌলবাদের সুগভীর বাসা, তা আমরা কজনইবা নির্ণয় করতে পারি?পারিনা বলেই অসাম্প্রদায়িকতার ঝান্ডা হাতে নিয়ে মনের অজান্তেই প্রতিনিয়ত সাম্প্রদায়িকতার বিষ-বাষ্প ছড়িয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রকে বিশৃঙ্খল করতে অবদান রেখে যাচ্ছি।
৭৪। বাংলাদেশে দেশে জন্ম নেওয়া একজন মানব সন্তানের প্রতিদিন মৃত্যুকে সঙ্গী করেই ঘর থেকে বের হতে হয়,সে জানে তার মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনায়,রাজনৈতিক সংঘাতে,সন্ত্রাসী বা মৌলবাদীর ছুরিকাঘাতে হতে পারে,এমনকি স্বয়ং সরকারী সিদ্ধান্তে তাকে হত্যা করে তার লাশ খাল, বিলে ফেলে রাখা বা বালুর বস্তায় ভরে নদীর তলদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।স্বাভাবিক মৃত্যু চিন্তা যেন এই ভূখন্ডের মানুষের এক অলীক ভাবনা..............!
৭৫।আজ বাংলাদেশের মানুষের অন্যায়ের সাথে প্রতিনিয়ত আপোষ করতে করতে যাবতীয় অপকর্মগুলো সমাজে ন্যায়রূপে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে এবং স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেওয়ার মনোবৃত্তি তৈরী হয়েছে।ফলোশ্রুতিতে,চোখের সামনে ঘটে যাওয়া শত শত অমানবিক ঘটনার প্রতিবাদের জন্য সামগ্রিক জাতিগোষ্ঠির ধমনিতে এখন আর কোন শিহরণ জাগায়-না।
৭৬।অনিয়মতান্ত্রিক সমাজ মানুষকে ভাগ্য বিশ্বাসে উদ্বুদ্ধ করে।
নিয়মতান্ত্রিক সমাজ মানুষকে কর্মে উদ্বুদ্ধ করে ।
৭৭। যে মানুষ প্রথমে নিজের পরিচয় না দিয়ে বাপ,দাদা অথবা আত্মীয় স্বজনের পদ পদবীর পরিচয় সামনে এনে আভিজাত্য বা দম্ভ প্রকাশ করে , বুঝে নেবেন- আপনি একজন মহাব্যর্থ ও অকর্মা মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন।
৭৮। কিছু মানুষের সাথে কথা বললে উজ্জীবিত হওয়া যায়, আশান্বিত হওয়া যায়,আত্মবিশ্বাস সুদৃঢ় হয়, প্রাণশক্তি সঞ্চার হয়,নতুন করে স্বপ্ন দেখার আলোর দিশা খুঁজে পাওয়া যায় ।
অন্যদিকে, কিছু মানুষের সংস্পর্শে গেলে বা কিছুক্ষণ কথা বললে মনে হবে ভেতরের প্রাণশক্তি নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে।নিজেকে অজ্ঞ ও ব্যর্থ মানুষ মনে হবে।
এরা সব কিছু নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে, এদের ইতিবাচক ভাবে দেখার চোখ অন্ধ।
সমাধান, এমন মানুষদের থেকে সব সময় দূরে থাকা, নিজের মঙ্গলের স্বার্থে।
৭৯। আমাদের ধর্ম বিশ্বাসী মানুষদের ধর্মীয় অনুভূতি যে পরিমাণ তীব্র তার অর্ধেক অনুতাপ যদি ধর্ম নির্দেশিত সৎ কর্মের বিপরীতে করা অপকর্মগুলোর জন্য অনুভব হতো তাহলে পৃথিবীর অর্ধেক অশান্তি দূর হয়ে যেতো।
৮০। যে চূড়ায় অবস্থান করে অহংকার ও ঔদ্ধত্য আচরণ করছেন, ঐ সুউচ্চ চূড়া থেকে একবার নিচের দিকে তাকান, দেখবেন এই চূড়ায় উঠতে কত মানুষ পিঠ পেতে সিঁড়ি বানিয়ে দিয়েছিলো আপনার জন্য।একবার অনুভবের চেষ্টা করুণ এক একটি সিঁড়ি আপনার ভরে কতটা ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাক্ত হয়েছে ।যে চূড়া যত উঁচু সে চূড়ার সিঁড়িও ততো বেশী।আপনার অবস্থানের চূড়া যত বেশী উঁচু ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত সিঁড়ির সংখ্যাও ততো বেশী। চূড়ায় সবাই উঠতে চায় কিন্তু অন্যের জন্য পিঠ পেতে নিঃস্বার্থ সিঁড়ি হতে চায় কজন মানুষ? সুউচ্চ চূড়ার চেয়ে সিঁড়ি অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হলেও সিঁড়ির মহত্ত্ব অনেক উঁচু।তাই চূড়ায় ওঠার পর যখন প্রতিটি সিঁড়ির অবদান ভুলে গিয়ে আপনার আচরণে অহংকার ও ঔদ্ধত্য প্রকাশ পায় তখন বুঝে নেবেন আপনার রক্তেের ধারায় কৃতঘ্নের ভয়ংকর জীবাণু এখনো মিশ্রিত রয়েছে।
৮১।ভালোবেসে যা অর্জন করা হয়ে ওঠেনি তা আইন দেখিয়ে অর্জনের চেষ্টা নিরর্থক বোকামি।
৮২। আপনার কষ্টের ও অনিশ্চয়তায় ভরা জীবন আরও অনিশ্চয়তায় নিমজ্জিত হতে পারতো, কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে আপনি একটি সমৃদ্ধ ও নিরাপদ জীবন পেয়ে গেছেন, এতটুকু প্রাপ্তি আপনি নিজেও কখনো প্রত্যাশা করতেন না আপনার পূর্বের অবস্থান ও অযোগ্যতার কারণে ।এখন আপনার জীবন নিয়ে সন্তুষ্টির ঢেকুর তোলার কথা, দেহ মনে সুখ অনুভূতি বয়ে বেড়ানোর কথা, অথচ আপনার আগের অনিশ্চয়তায় ভরা কষ্টের জীবনের হতাশার চেয়ে এখন অপ্রাপ্তির দীর্ঘশ্বাস আরও দীর্ঘ হচ্ছে !
জীবনের সুখ ও দুঃখের পার্থক্য বুঝতে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন জ্ঞানের প্রয়োজন হয়, যা আপনি অর্জন করতে পারেনি, তাই এই অপ্রাপ্তির কষ্ট ও হতাশা। অর্থ উপার্জন করেছেন,সুনাম অর্জন করেছেন, বড় ডিগ্রি অর্জন করেছেন কিন্তু জীবনের প্রশান্তি অর্জনের জ্ঞান এখনো আপনার কাছে ধরা দেয়নি।ব্যক্তিজীবনে আপনি পৃথিবীর বড় অসহায়, হতভাগা, ব্যর্থ মানুষদের দলের একজন,তা কখনো ভেবে দেখেছেন কি ?
৮২। "মহত্ত্বের চেয়ে স্বার্থ যেখানে বড়"
আমরা অনেকে সময় খুব কাছের মানুষদের স্বার্থপর আচরণে মর্মাহত হই।এমন পরিস্থিতি বা এমন আচরণ আমরা হয়তো প্রিয়জনদের কাছ থেকে কখনো প্রত্যাশা করিনা, এমন কি কখনো চিন্তা করিনা।বাস্তবতা,প্রায় প্রত্যেকেরই জীবনে কখনো এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়।প্রত্যাশা, বাস্তবতা এবং অনুভবের এই সমন্বয়হীনতা আমাদেরকে দারুণ ভাবে হতাশাগ্রস্ত করে তোলে। চলমান জীবন ছন্দ হারিয়ে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।কারো কাছে বেঁচে থাকাটা শুধুই অর্থহীন উদ্দেশ্যহীন এবং অপচয় বলেও মনে হয়।
জগতের নিয়মই হয়তো এমন, তবে প্রথম প্রথম কষ্টটা অসহনীয় হলেও পরে সয়ে যায়। পরবর্তীতে স্বার্থপর কাছের মানুষদের সাথে নিয়মের লেনদেন থাকলেও আত্মার টান আর থাকেনা। এতে বরং তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কারণ যে ভালোবাসা ও অনুভবের জায়গা থেকে আমরা কাছের প্রিয় মানুষদের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মানসিকতা তৈরি করি সেই মানিসিকতা ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে।অর্থ ও স্বার্থের সম্পর্কে নির্ধারিত কিছু পাওয়া যায়, কিন্তু যার পাশে ত্যাগের মানসিকতা সম্পন্ন একজন মানুষ থাকে সে পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ ও সৌভাগ্যবান মানুষ। এই উপলব্ধি জ্ঞান না থাকায় নগদ বিশ্বাসী মানুষেরা নগর প্রাপ্তি ছাড়া তাদের পাশে ছায়ার মত দাঁড়িয়ে থাকা অদৃশ্য অমূল্য সম্পদ আবিষ্কার করতে পারে না।তাই না বুঝে তারা পরার্থপর আপন ত্যাগী মানুষদের সঙ্গে স্বার্থপর আচরণ করে ফেলে।
যে মানুষ তার পুরো জীবনটাই আপনার জন্য ত্যাগ করতে নিজেকে প্রস্তুত রেখেছিলো সেই মানুষটির কাছ থেকে যখন নির্ধারিত কিছু আদায় করে নিজেকে লাভবান মনে করেন তখন তাৎক্ষণিক হয়তো বোধগম্য হয়না পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত হতভাগা মানুষ আপনিই।পরবর্তীতে বোধ ফিরে আসে কিন্তু সেই মহৎ মানুষটিকে আর আগের মত করে পাওয়া যায়না ।
এই জগত ও মানুষের জীবন বড়ই অদ্ভুত। জীবন চলার বাঁকে বাঁকে মানুষের নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় । মানুষের ভাবনার সঙ্গে চূড়ান্ত বাস্তবতা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিপরীতমুখী। এর নামই মানব জনম……
সব চেয়ে বড় কথা হচ্ছে, জীবনটা বড় অদ্ভুত রকমের সুন্দর। প্রতিটি প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির মধ্যে সমন্বয়হীনতা মানুষকে প্রচণ্ড কষ্ট দিয়ে অসাধারণ কিছু শিক্ষা দেয় এবং জীবনের অনাবিষ্কৃত সৌন্দর্যের দুয়ার উন্মোচন করে দেয়।এমন মুহূর্তেই বেঁচে থাকার আরও মহৎ এবং সুন্দর দিগন্তের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে কষ্টের মুহূর্তগুলো খুব ধৈর্য সহকারে পাড়ি দেয়াটাই বড় পরীক্ষা……!
৮৩।আমাদের মানব জীবন অনেকটা ফসলি মাঠের মতো।তাই, ভালো ফলনের জন্য শস্য ক্ষেতের পরিচর্যা যেমন অপরিহার্য, তেমনি আমাদের জীবনের ফসলি মাঠটাও মাঝে মাঝে পরিচর্যা করা অত্যাবশ্যক।
তা নাহলে জীবনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।
শস্য ক্ষেতে আগাছার বীজ বপন না করলেও দেখা যায় ফসলি গাছের চারপাশে আগাছা জন্মে ফসলী গাছের ক্ষতি সাধন করছে ।তাই ভালো ফলনের লক্ষ্যে মাঝে মাঝে শস্য গাছের চারপাশ থেকে আগাছাগুলো নিড়ানি দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়। বার বার উপড়ে ফেলার পরও আগাছা জন্মাতেই থাকে।শস্য ক্ষেতের ধরণই এমন।
আমাদের চলমান জীবনে অনেক সময় আমাদের চারপাশে বিভিন্ন সূত্র ধরে কিছু মানুষের আবির্ভাব হয় যারা ফসলী মাঠের আগাছার মতো।জীবন যতদিন থাকবে এমন মানুষের আগমন কোন না কোন ভাবে ঘটতেই থাকে। এরা যতক্ষণ আমাদের চারপাশে অবস্থান করে ততক্ষণ জীবনের সঞ্জীবনী শক্তি নিঃশেষ করতে থাকে।ফলে জীবনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের যাত্রাপথে বাধা সৃষ্টি হয়।ফসলি গাছের রস নিঃসরণ করা ছাড়া মাঠের আগাছার যেমন কোন কাজ নেই, তেমনি আমাদের জীবনের চারপাশে ঘিরে থাকা আগাছাগুলোরও অন্যের রস নিঃসরণ করা ছাড়া কারো জীবনে বিশেষ কোন ভূমিকা থাকে না।তাই, মাঝে মাঝে আমাদের জীবনের ফসলী মাঠটাও আগাছামুক্ত করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া উচিত সুন্দর অনুভূতিময় জীবনের স্বার্থে ……