সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা জানি, কোন ক্রিয়ার কারণে প্রতিক্রিয়া হয়,প্রতিক্রিয়ার কারণে ক্রিয়া তৈরি হয়। অর্থাৎ, কোন ঘটনার পেছনে অবশ্যই কোন কারণ থাকবে, আমাদের চোখের সামনে যখন একটি ঘটনা এসে দাঁড়ায়,তখন স্বাভাবিকভাবেই আমরা উত্তর খুঁজি, ঘটনাটা কেন ঘটেছে?এবং এটাই যৌক্তিকতা।কিন্তু এই পৃথিবীতে অহরহই অনেক ঘটনা ঘটে যা কারণ ছাড়াই। এটাও মিথ্যে নয়। কিন্তু , কোন ঘটনা কারণ ছাড়াও ঘটতে পারে,কোনকিছু না করেও কেউ বড় অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারে, এমনকি দোষী হিসেবে প্রমাণিত হয়ে শাস্তি ভোগ করতে পারে, এভাবে আমরা অধিকাংশ মানুষ বিচার,বিবেচনা ও ভেবে অভ্যস্ত নই।
বাস্তব জীবনে কোন ঘটনা না ঘটিয়ে বা কোন ঘটনার সাথে যুক্ত না থেকে কোন দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে অভিযুক্ত যে ব্যক্তি হয়নি তার পক্ষে এই উপলব্ধি করা দুরূহ কঠিন।
আমরা সাধারণ চোখ দিয়ে যা কিছু দেখি এবং কান দিয়ে শুনে বিশ্বাস করি তার অনেক কিছুই শতভাগ মিথ্যা।কারণ, ঘটনার মূলে গিয়ে বিষয়বস্তু পর্যবেক্ষণের সময় ও ইচ্ছে আমাদের অধিকাংশ মানুষের থাকে না বলেই অনেক সময় মিথ্যাকেই সত্য বলে বিশ্বাস করে থাকি।
আমরা একটা প্রবাদ শুনে থাকি « যেমন কর্ম তেমন ফল » প্রবাদটি যুক্তিযুক্ত হলেও শতভাগ যৌক্তিক নয়।এই পৃথিবীতে সব ফলই কর্ম দ্বারা নির্ধারিত হয়না।কখনো কখনো আমাদের জীবনে এমন কিছু অদ্ভুদ ঘটনা ঘটে যে আমরা হতবম্ব হয়ে যাই।দেখা যায়, কর্মই করা হয়নি অথচ বিদঘুটে ফলাফল আমাদের দরজায় এসে কড়া নাড়ছে। আমরা অবাক হই,হতবাগ হই,এক সময় উত্তরণ লাভ করি, কিন্তু অদৃশ্য ঝড়ে ধ্বংস হওয়া জীবনের সাজানো গোছানো স্তম্ভগুলোকে আবার সোজা করে দাড় করাতে অনেক বেগ পোহাতে হয়, অনেক সময় ছোট্ট জীবনের মূল্যবান অনেক সময় অতিবাহিত হয়ে যায় হতাশার মধ্যদিয়ে ।আপনি জীবনে চুরি করবেন না, অন্যের উপর অন্যায় আচরণ করবেন না বলে ব্রত নিয়েছেন, যাতে এই সমাজে আমৃত্যু সৎ মানুষের পরিচয়ে বাঁচতে পারেন।আপনার ব্রত অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করলেও আপনি যে এমন জীবন পাবেন তার নিশ্চয়তা এই পৃথিবীতে শতভাগ নেই।আমাদের প্রত্যেককে ঘিরে আমাদের কর্মজীবন ও সমাজ সংসারে অনেক মানুষ আবর্তিত হয় ।এই মানুষগুলোর মধ্যে কেউ সৎ,কেউ অসৎ, কেউ প্রচণ্ড স্বার্থপর, কেউ প্রচণ্ড উদার,কেউ বিশ্বাসী ,কেউ সন্দেহ বাতিকগ্রস্ত, যাদের উপর নির্ভর করে আমাদের জীবনের উন্নতি অবনতির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই মানুষগুলোর কারণে প্রত্যাশার চেয়ে জীবনে অনেক বড় ইতিবাচক প্রাপ্তি আসতে পারে। আবার, এই মানুষগুলোর কারণে খুন না করেও সারা জীবন খুনের আসামী হয়ে কারাগারে জীবন পার হতে পারে ।আপনি খুন করেনি অথচ মানুষ জানবে আপনি একজন খুনি। যা আপনার কর্মফল নয়।
দেশের আইন আদালতের রায় অনুযায়ী সাব্যস্ত কোন মানুষকে আমরা অপরাধী আবার নিপরাধী বলে থাকি। অনেক তদন্ত,সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে এই রায় দেয়া হয় বলেই আমাদের এই আস্থা বা বিশ্বাস।অথচ অন্যায় না করেও এই আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জীবনটাই বলি হয়ে যায় অনেক মানুষের। যা আমাদের দেশসহ সারা পৃথিবীতেই এমন ঘটনা চলমান।
বাংলাদেশে অপরাধ না করেও বছরের পর বছর কারাগারে থাকতে হয়েছে যাদের
কোন ঘটনা দেখা ও শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মন্তব্য ও বিচার করার যে সহজাত প্রবণতা রয়েছে তা পরিবর্তন আনা জরুরি।কারো প্রতি কোন মন্তব্য ছুড়ে দেবার পূর্বে অন্তত একবার ভাবা উচিত যে আমার একটি মন্তব্য অন্যের জীবন ও কর্মে উপর উপর প্রভাব বিস্তার করবে।যে প্রভাবে কারো জীবনের গতি পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। মন্তব্য অবশ্যই করবো তবে তা হতে হবে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন……।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন