শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

পৃথিবীর অমূল্য দামি সম্পদের নাম "সম্পর্ক"

আমরা সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পদ বলতে অর্থকড়িকে বুঝি। এই সম্পদের পাল্লা ভারি করার জন্য আমরা  অনেক সময় অতি আপন  অনুভূতির সম্পর্কগুলোকে বিসর্জন দিতে দ্বিধা করি না। 


অথচ, আমরা অধিকাংশ মানুষ উপলব্ধি করতে পারি না যে পৃথিবীর অমূল্য  দামি সম্পদের নাম সম্পর্ক। 


সম্পর্ক ত্যাগ করে বস্তুগত সম্পদ ভারি করার পর দেখলেন, আপনার চারপাশ ভোগ  প্রাচুর্যতায় এতই ভরপুর হয়েছে যে  যা এই এক জীবনে আপনি ভোগ করে যেতে পারবেন না, কিন্তু, যা নাই তা হল,আপনার আশেপাশে  আপনাকে  ভালোবাসার একজন মানুষ ,আপনাকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করার মত একজন স্বজন । যে মানুষগুলো আপনার চারপাশে ঘিরে আছে তারা হল স্বার্থ ও  লেনদেন সংশ্লিষ্ট  এবং আপনার অবস্থানের মোহাবিষ্ট মানুষ। যারা আপনার অসুস্থতায় কখনোই কপালে মমতার স্পর্শের হাত  রেখে এক মিনিট পাশে বসবে না।আপনার  বিপদের কথা শুনে কখনোই দ্রুত হন্তদন্ত হয়ে  ছুটে আসবে না।


পৃথিবীতে সেই লোকই  বড় সম্পদশালী যার আপন পরিবার ,চারপাশের আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব নামক সম্পর্কগুলো  অতি মজবুদ । যে মানুষগুলো এই সম্পর্কগুলো থেকে ছিন্ন হয়েছে শুধুই  স্বার্থের কারণে তাদের চেয়ে হত দরিদ্র মানুষ আর কে হতে পারে ।  


সম্পর্কের সঙ্গে  অনুভূতির সংযোগ,বস্তুর সঙ্গে ভোগের সংযোগ ।  


যে জীবনের চারপাশে অনুভূতির আনাগোনা নেই সে জীবন প্রাণহীন জড়বস্তু ছাড়া কিছু নয়। 


তাই, স্বার্থের জন্য সম্পর্ক ছিন্ন নয়, বরং চারপাশে আমাদেরকে ঘিরে যে অনুভূতির সম্পর্কগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তার যত্ন নেয়া অতীব জরুরি।

বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

মানব ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচার কৌশল

প্রতিটি দুর্যোগের মধ্যে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি নিহত থাকলেও  বড় কিছু  শিক্ষণীয় বিষয়ও থাকে। যা আমাদের চলমান জীবনে প্রয়োগ করলে জীবনের সম্ভাব্য অনেক বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে সহায়ক হতে পারে। 

 ভাইরাস হলো এক প্রকার অতিক্ষুদ্র জৈব কণা বা  অণুজীব । যারা জীবিত কোষের  ভিতরে  বংশবৃদ্ধি করে নীরবে রোগ সৃষ্টি করে  ক্ষতি সাধন করে থাকে।কিছু ভাইরাস এমন ক্ষতিকর যে জীবন নাশের কারণ হয়ে দাড়ায়। 


যা আমরা সাম্প্রতিক সময়ে চাক্ষুষ পর্যবেক্ষণ করেছি  করোনা ভাইরাসের মহা তাণ্ডব লীলার ভেতর দিয়ে। একটি অদৃশ্য জীবাণু নীরবে কীভাবে শক্তিশালী মানব গোষ্ঠীর জন্য হুমকি হয়ে  ওঠে! 

করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মানুষ ভারী কোন যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে  লড়াই করেনি।লড়াই  করেছে ভিন্ন কৌশলে। অদৃশ্য নীরব ঘাতকের সঙ্গে কখনো সম্মুখে লড়াই করা যায়না। এই লড়াইয়ে যে অস্ত্রগুলো  ব্যবহার হয়েছে তার অন্যতম প্রধান অস্ত্রের নাম «  লক ডাউন » । অর্থাৎ শত্রু আগমনে প্রবেশ পথ বন্ধ করে দিয়ে শত্রুকে প্রতিহত করা।

ভয়ংকর করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষার এই কৌশলটি খুবই কার্যকর হয়ে উঠেছিলো চরম দুর্যোগকালীন সময়ে এবং মানুষ এই কৌশলে মাধ্যমে সফলতাও অর্জন করেছে।  


কৌশলটি আমাদের বাস্তব জীবনের  অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য । 


আমরা চলমান  জীবনে প্রায়শ আমাদের আশেপাশের কিছু মানুষ দ্বারা ভয়ংকর ভাইরাসের সংক্রমণের মতই নীরবে ও ধীর স্থির গতিতে ক্ষতির সম্মুখীন হই।কিন্তু, আক্রমণের ভয়াবহতা তাৎক্ষণিক ভাবে বুঝতে না পেরে তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করি ।এদের অদৃশ্য কার্যকলাপের ফলে ভাইরাসের মতই এসব মানুষদের  সাধারণভাবে  দৃষ্টির গোচরে আনা যায়না। এদের নেতিবাচক কার্যকলাপ এতো নিখুঁত যে শত্রু হিসেবে সহজে চিহ্নিত করা  খুবই দুরূহ। এদের কথা বার্তা, আচার আচরণ, সামাজিক লেনদেনে থাকবে আপনার সঙ্গে চরম বন্ধুর মত, কিন্তু বাস্তবে শত্রুর আসনে বসে নীরবে ধিরস্থির গতিতে আপনার অমঙ্গল  সাধন করে যাবে। এদের শত্রুর ভূমিকাটা এতোটাই শৈল্পিক কারুকার্যে পরিচালিত হয় যে, আপনি বুঝতে পেরেও কাউকে কিছু বলতে পারবেন না।বললে, উল্টো আপনিই অন্যের নিকট ভুল বোঝার শিকার হতে পারেন। ভাইরাসের প্রধান চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হল প্রাণের ক্ষতি সাধন করা। তার  কোন ক্ষতি না করলে সে এটা করবেই।তেমনি মানব ছুরতের ভাইরাসগুলোর সাথে আপনার কোনও শত্রুতা না থাক, অথবা আপনি তাকে যতই সম্মান ও সমীহ করেননা কেন, তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কাজ করেই যাবে। অর্থাৎ, এদের ব্যপারে সতর্কমূলক ব্যবস্থা না গ্রহণ করলে অমঙ্গল সাধনের  যাবতীয় কর্মকাণ্ড আপনার উপর নীরবে অব্যাহত রাখবে।  


তাহলে এসব অদৃশ্য মানব ভাইরাস  থেকে বাঁচার কার্যকর উপায় কি ?


উপায়, করোনা ভাইরাস প্রতিহত করার কার্যকর  প্রধান অস্ত্র« লক ডাউন’ »কৌশলের প্রয়োগ। অর্থাৎ, মানুষরূপী ভাইরাসগুলো কোন পথে আপনার জীবনে প্রবেশ করে জীবনের ক্ষতি সাধন করছে,মানসিক শান্তি নষ্ট করছে সেই পথগুলোতে চিহ্নিত করা এবং লক ডাউন দিয়ে ভাইরাসগুলোর প্রবেশ পথ বন্ধ করে কৌশলে এদেরকে  দূরে সরিয়ে রাখা।এই মানুষরূপী ভাইরাসগুলো এতোই ভয়ংকর যে ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে বিনাশ করতে গেলে উল্টো ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার স্বীকার   হওয়ার সম্ভাবনাই অনেক বেশী।  

তাই,মানব ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে নীরবে লক ডাউন কৌশল প্রয়োগের চেয়ে উত্তম কৌশল আর কিছু হতে পারে না।